প্রাথমিকভাবে রোগীকে পরীক্ষা করার পর প্রয়োজন মনে হলে হৃদরোগ বিশেষজ্ঞগণ প্রথমে যে পরীক্ষাটি করাতে বলেন সেটি হচ্ছে ইসিজি বা ইলেকট্রোকার্ডিওগ্রাফি। অনেকে একে ইকেজি-ও বলে থাকেন।
এটি একটি নন-ইনভেসিভ পরীক্ষা, অর্থাৎ রোগীর শরীর কাটাছেঁড়া করে ভেতরে কিছু প্রবেশ করানোর প্রয়োজন হয় না।
মোটামুটি পাঁচ মিনিটের মত সময় লাগে পরীক্ষাটি করতে। হৃদপিন্ড তার স্বাভাবিক ছন্দে কাজ করছে কিনা, হৃদপিন্ডের অবস্থান, হৃদপেশীর কোন অংশ অতিরিক্ত পুরু হয়ে গেছে কিনা, হৃদপেশীর কোন অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কিনা, রক্ত প্রবাহে কোন অস্বাভাবিকতা আছে কিনা ইত্যাদি বিষয় হৃদপিন্ডের বৈদ্যুতিক ক্রিয়া পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে বোঝার চেষ্টা করা হয়।
একটি কাগজে গ্রাফ আকারে ইসিজি পরীক্ষার ফলাফল বা রিপোর্ট তৈরি হয়। আধুনিক ইসিজি মেশিনগুলোয় তাৎক্ষণিকভাবে একটি ডিসপ্লেতে-ও ইসিজি গ্রাফ পর্যবেক্ষণ করা যায়।
এই গ্রাফ দেখেই চিকিৎসক বুঝে নেন রোগীর হার্ট এটাক আছে কিনা, রক্তে হৃদপিন্ডের জন্য ক্ষতিকর মাত্রায় পটাশিয়াম, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম ইত্যাদি ইলেকট্রোলাইট থাকার লক্ষণ আছে কিনা, উচ্চ রক্তচাপের কোন ক্ষতিকর প্রভাব তৈরি হয়েছে কিনা।
এজন্য একটি সমতল বিছানায় রোগীকে শুইয়ে দুই হাত, দুই পা এবং হৃদপিন্ডের কাছাকাছি ছয়টি নির্ধারিত স্থানে ইলেকট্রোড বা তড়িৎদ্বার লাগানো হয়। পরিবাহীতা বৃদ্ধির জন্য চামড়ায় বিশেষ ধরনের জেলও লাগানো হয় অনেক সময়।
এ পরীক্ষা সম্পূর্ণ ব্যাথামুক্ত এবং কোন পূর্বপ্রস্তুতি প্রয়োজন হয় না। তবে কোন পুরুষের বুকে অতিরিক্ত লোম থাকলে বিদ্যুৎ পরিবাহীতা বাড়ানোর জন্য শেভ করার প্রয়োজন হতে পারে।
কেবল বুকে ব্যাথা ও শ্বাসকষ্টের অভিযোগ নিয়ে আসা রোগীর ক্ষেত্রেই নয়, বয়স্ক রোগীর অপারেশনের পূর্বপ্রস্তুতির অংশ হিসেবেও ইসিজি করা হয়। তাছাড়া ইসিজি নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষারও একটি অংশ।
ইসিজি করার পর রোগীর অবস্থা বুঝে আরও বিভিন্ন ধরনের পরীক্ষার পরামর্শ দিতে পারেন চিকিৎসক। এসব পরীক্ষার মধ্যে ইটিটি, ইকো কার্ডিওগ্রাফি এবং এনজিওগ্রাফি উল্লেখযোগ্য।